দুদক বিতর্ক ২০২৪ এর অনুভূতি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক ২০২৪ সালে আয়োজিত দুর্নীতি বিরোধী বিতর্কের আদ্যোপান্ত এবং ৩য় বক্তা ও এসএসসি ২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে আমার অনুভূতি:
বিতর্ক। ছোট্ট এই শব্দটার সঙ্গে জুড়ে আছে আমার হাজারও স্মৃতি। সেই ক্লাস ৪-৫ এ থাকতে বিটিভিতে দেখানো বিতর্ক মনোযোগ দিয়ে দেখা আর ভাবা আমিও একদিন বিতার্কিক হবো। অনাবিল আগ্রহ থাকলেও ছিলো না কোনো দক্ষতা ও সুযোগ। একদিন হঠাৎ ক্লাস ৬ এর শুরুতেই আজহার স্যারের"বিতর্ক কে কে করতে চাও?" ডাকে সাড়া দিয়ে জীবনের প্রথম বিতর্ক করা। তারপর দীর্ঘ ৩ বছরের বিরতির পর সক্রিয় ভাবে পুনরায় ১০শ্রেণিতে উঠে বিতর্ক শুরু। একে একে এলএসডিবি, সমকাল, স্কুলের টুর্নামেন্ট এর বিতর্কের পর আবার যখন বিতর্কে বিরতি লম্বা হতে শুরু করে তখন আর একটি বিতর্ক করার জন্য আমার মন আকুপাকু করতে থাকে। তখনই জুলাই মাসের দিকে আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলায় দুদক কর্তৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা দেখে অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকি কবে আমাদের সদর উপজেলায় হবে প্রতিযোগিতাটি। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় নভেম্বর মাসের ৪ তারিখে যখন দুদকের বগুড়া শাখার অফিস থেকে এক পূর্বপরিচিত আংকেল আমাকে ফোন দিয়ে ৯ তারিখ বিতর্কের প্রস্তুতি নিতে বলে ।মনের আনন্দে লাফাতে লাফাতে ভুলেই গিয়েছিলাম আমার টেস্ট (নির্বাচনী) পরীক্ষা চলছে এবং ১০ তারিখে আমার উচ্চতর গণিত পরীক্ষা। যদিও পরীক্ষা বাদ দিয়ে যাবার খুব ইচ্ছে ছিল, তবুও বাবার কথা ফেলে দেওয়ার সাহস ও বয়স কোনোটিই আমার নেই। তাই ৯ তারিখে আমার পরিবর্তে অংশ নেয় ৭ম শ্রেণির যারিন তাসনিম তুলি ১ম বক্তা হিসেবে। আর দলনেতার জায়গায় বসে ৯ম শ্রেণির সাদিয়া জায়মা। ২য় বক্তা হিসেবে ছিল ৭ম শ্রেণির ফাতেমা তুজ জোহুরা। পরবর্তী রাউন্ডগুলোতে তুলির বদলে আমি ৩য় বক্তা এবং সাদিয়া ১ম বক্তা এমন পরিকল্পনা হয়। এভাবে বক্তা পরিবর্তনে সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য দুদকের আরেকজন আংকেলের কাছে জানতে চাইলে আংকেল বললেন, "হ্যাঁ যাবে, তবে পরবর্তী রাউন্ডে যাবার জন্য তোমাদের আগে ৯ তারিখে ১ম রাউন্ডে জিততে হবে।" কথাটি সামান্য হলেও অসামান্যভাবে বুকে আঘাত করলো। ব্যাটালিয়নের তার্কিকরা তাই বলে ১ম রাউন্ডেই হেরে যাবে!! সাথে সাথে পণ করে নিলাম জয় ছিনিয়ে এপিবিএন ই আনবে।
যেই ভাবা সেই কাজ, পরীক্ষার প্রস্তুতি রেখে লেগে পড়লাম বিষয় নিয়ে দল কে সাহায্য করতে। সবাইকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অ্যাড দিয়ে গ্রুপের নাম দিলাম "দুদকে জয় আনবোই"। প্রস্তুতি পুরোদমে আগাচ্ছিল, জেলা স্কুলের এক বন্ধু জানিয়ে দিল আমাদের প্রতিপক্ষ বগুড়া পৌর স্কুল।
তারপর ৯ তারিখে ৩ তার্কিক, আমি, শ্রদ্ধেয় শামছুন নাহার ম্যাম ও আশিক স্যার এবং ২৪ ব্যাচের আবিদ ভাই সহ বেশ কিছু ভাই যথাসময়ে অংশ নিতে উপস্থিত হয়ে গেলাম। ১৬টি স্কুল পরস্পর 'অভাব নয় সীমাহীন লোভই দুর্নীতির মূল কারণ' বিষয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে। এপিবিএনের ৩ জন ই মেয়ে এবং পৌর স্কুলের ৩ জন ছেলে তার্কিকের তর্কযুদ্ধে ভেন্যু ইয়াকুবিয়া স্কুলের ২১৬ নাম্বার রুম মেতে ওঠে। যদিও পৌর স্কুলের তার্কিক রা বেশ ভালোই পারফর্ম করছিল, তবে আমাদের ১ম বক্তা তুলির সাবলীল বক্তব্য, ২য় বক্তা ফাতেমার মনোমুগ্ধকর কন্ঠ এবং ৩য় বক্তা সাদিয়ার গর্জে ওঠা গলায় জয় আমাদের ঝুলিতেই পরে। পুরো ২৩১ নাম্বার পয়েন্ট পেয়ে এপিবিএন জয় লাভ করে যা ছিলো সেদিনের ১৬টি স্কুলের মধ্যে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নাম্বার। পরবর্তী ১১ তারিখের কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ডের জন্য আমাদের প্রতিপক্ষ নির্বাচিত হয় করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ। এবার মাঠে আমি নামলাম ৩য় বক্তা হিসেবে এবং সাদিয়া জায়মা হলো ১ম বক্তা। তুলি এখানে নিজের জায়গা ছেড়ে দিলো। অত:পর "সামাজিক আন্দোলন ই দুর্নীতি প্রতিরোধের কার্যকর উপায়" বিষয়ের পক্ষে লড়ে করতোয়ার সঙ্গেও আমরা জিতে গেলাম এবং সেদিনই সেমি ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় যেখানে আমাদের সঙ্গে লড়ে বিএএফ শাহীন স্কুল। "দুর্নীতি দমনে প্রতিরোধই সর্বোত্তম পন্থা" বিষয়ের বিপক্ষে দুর্নীতির প্রতিকার নিয়ে যুক্তি উপস্থাপন করে বিএএফ শাহীন কেও হারিয়ে দেই। বক্তব্যের সময় দর্শক সারি থেকে আসা হাততালি তে আমাদের আত্মবিশ্বাস যেন বেড়ে আরও কয়েক গুণ হয়ে যাচ্ছিল। প্রতিবার বিতর্ক শেষে নাহার ম্যাম কে বলছিলাম "ম্যাম আমরা জিতে গেছি না?" এবং ম্যাম বলতেন "তোমরা ভালো বলেছ,কিন্তু প্রতিপক্ষ ও খারাপ বলেনি। দেখা যাক কী হয়।" তারপর মাইকের ঘোষণা - 'বিজয়ী দল আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।' অন্যান্য স্কুল তাদের জয়ের খবরে বেশ চিল্লাপাল্লা করলেও আমাদের মধ্যে আনন্দ প্রকাশের তেমন কোনো মাথাব্যথা ছিল না। কারণ আমরা আগে থেকেই জানতাম আমরা জিতবোই, এপিবিএনের তার্কিক এত আগে হেরে যেতেই পারে নাকি! প্রাথমিক ভাবে ১৬টি স্কুল নিয়ে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতায় সেমি ফাইনালের পর টিকে থাকে ২টি স্কুল, বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজ এবং আমাদের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ।
অবশেষে ১৩ তারিখ, সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ইয়াকুবিয়া স্কুলের ২ তলার হলরুমে আমাদের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে আমরা লড়ছিলাম "দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের অভাবই দুর্নীতি বিস্তারের প্রধান কারণ," বিষয়ের পক্ষে। বিদ্রোহী কবিতা দিয়ে ১ম বক্তা সাদিয়া জায়মা তার বক্তব্য শুরু করে আমাদের দলের দৃঢ় অবস্থানের ভিত্তি দিয়ে যায়, যে অবস্থানের ধারাবাহিকতা ২য় বক্তা ফাতেমা নিজের সুরেলা কন্ঠ দিয়ে বিচারক ও দর্শককে মুগ্ধ করে বেশ ভালোভাবেই রেখে যেতে পেরেছে। আমি ৩য় বক্তা হিসেবে যতটুকু আউটপুট দিব আশা করেছিলাম, যদিও ততটুকু দিতে পারিনি তবুও সার্বিক ভাবে আমাদের দলের অবস্থান বেশ ভালোই ছিল। অপরদিকে বিয়াম মডেলের ১ম বক্তা সুন্দর ব্যাখ্যা, ২য় বক্তা চমৎকার তথ্যের উপস্থাপন এবং ৩য় বক্তার উত্তেজিত বক্তব্যে তারাও পিছিয়ে ছিল না। যদিও আমরা বেশ ভালোভাবেই আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলাম তবে ভুলবশত আমি সময় শেষ হওয়ার আগেই আমার বক্তব্য শেষ করি, যা অবশ্যই একজন তার্কিক হিসেবে কাম্য নয়। তাই ভয় হচ্ছিল হয়তো হেরেই যাই কিনা। সেদিন বিচারক ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিস এবং দুদকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, যারা যথেষ্ট বিজ্ঞ ছিল। শুধু মনে হচ্ছিল আমার কারণে আমার দল হারলে নাহার ম্যাম কে মুখ দেখাবো কি করে। শুধু নিচু হয়ে আল্লাহর নামের জিকির করছিলাম আর বলছিলাম আল্লাহ এবারের মতো জিতিয়ে দাও। যদিও আমি কোনো বিতর্কেই স্ক্রিপ্ট করে নিয়ে যাইনা তাই সঠিকভাবে কি বলেছিলাম মনে করতে পারছিনা। তবুও আমার বক্তব্যের যেটুকু মনে রয়েছে তার একাংশ এখানে তুলে ধরছি -
" স্বদেশের উপকারে নেই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন। -
কবি আব্দুল হাকিম তার এই কবিতার মাধ্যমেই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন যে দেশপ্রেমের অভাব একজন ব্যক্তির মনুষ্যত্ববোধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে, আর মনুষ্যত্বহীন ব্যক্তি দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে নিজ স্বার্থে দুর্নীতির বিস্তার ঘটাবে সেটাই স্বাভাবিক। বাস্তবতার এই প্রেক্ষাপট কে সামনে রেখেই আজকের বিতর্কের বিষয়বস্তু নির্ধারিত হয়েছে 'দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের অভাবই দুর্নীতি বিস্তারের প্রধাণ কারণ।' উক্ত বিষয়বস্তুর পক্ষে আমার ও আমার দলের সুদৃঢ় অবস্থান। মাননীয় সভাপতি, বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী ও উপস্থিত সুধী সকলকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের বিতর্ক। মাননীয় সভাপতি আজ আমরা বিতর্ক করছি দুর্নীতি বিস্তারের কারণ উদঘাটনে। যেখানে প্রতিপক্ষ বলছে সুশাসনের কথা, কিন্তু আমরা বলছি সুশাসন নয় বরং দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের অভাবই দুর্নীতি বিস্তারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। কারণ, সুশাসন টা আনবে কে? অবশ্যই সরকার। দিনশেষে সেই সরকার ও একজন রক্ত মাংসের মানুষ। সেই মানুষের মধ্যেই যদি দেশপ্রেম ও মূল্যবোধ না থাকে তবেই তো সে সুশাসনের অভাব ঘটিয়ে দুর্নীতি করবে। ঠিক সেই জায়গাটিতেই দাঁড়িয়ে আমরা বিতর্ক করছি আর বলছি সরকারের সুশাসন আনতেও সরকারের মধ্যে যেমন দেশপ্রেম ও মূল্যবোধ থাকতে হবে তেমনই আবার সরকার যতই সুশাসন নিশ্চিত করুক বা আইন প্রণয়ন করুক তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ততদিন হবে না যতদিন না জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের সঞ্চার হচ্ছে।..." (সংক্ষেপিত)
সেদিন মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আজিজুল হক কলেজের অধ্যাপক ম্যাডাম যিনি নিপুণভাবে ৬জন বক্তার ভুল তুলে ধরলেন এবং ভালো দিকের প্রশংসা করলেন। কিন্তু ওসব প্রশংসা আমার টেনশন কে কিছুতেই দ্রবীভূত করতে পারছিল না। অতিথিদের দীর্ঘ বক্তব্যের পর অবশেষে যখন মাইকে ঘোষণা এল বিজয়ী হয়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ, সেই মুহূর্তের যে অনুভূতি তা গলা ফাটিয়ে চিল্লিয়ে কেঁদে কেঁদে পুরো হলরুম ভাসিয়ে দিয়ে বাঁদরের মতো নেচে বেড়ালেও সম্পূর্ণ প্রকাশ করা যাবে না। তাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলহামদুলিল্লাহ বলে মুচকি হেসে আনন্দ প্রকাশের পাঠটুকু চুকিয়ে দিলাম।
পুরো ১৭ মার্কের ব্যবধানে প্রতিপক্ষ কে কুপোকাত করেছি শোনার পর ভাবতে লাগলাম ভাগ্যিস সময়ের আগেই বক্তব্য শেষ করেছি। পুরো বক্তব্য শেষ করলে তো প্রতিপক্ষের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতো। সে যাকগে, এরপর মঞ্চে উঠে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রদ্ধেয় বগুড়া জেলা প্রশাসক ম্যাডামের হাত থেকে একে একে রানার্স আপ বিয়াম মডেল ও বিজয়ী আমাদের দলের ৩ বক্তা পুরস্কার নিলাম। বিতর্ক শেষে ইয়াকুবিয়া স্কুল কর্তৃপক্ষকে এত সুন্দর ও চমৎকার আয়োজন এবং ম্যানেজমেন্টের জন্য আমরা উপহারও দিয়ে এসেছিলাম যার সম্পূর্ণ ক্রেডিট আবিদ ভাইয়ের।তবে যাই হোক, নিজের শপথ রাখতে পেরে শেষ হাসি সেদিন এপিবিএন ই হেসেছিল।
আমার স্কুল জীবনের সংক্ষিপ্ত বিতর্কের জার্নিতে যুক্ত হলো আরেকটা নতুন স্মৃতি, যে স্মৃতির অংশ হয়ে থাকবে তুলি,সাদিয়া,ফাতেমা। তোমাদের মতো জুনিয়র পাওয়া সত্যিই আমার জন্য বেশ ভাগ্যের ব্যাপার। বিশেষ করে তুলি, তুমি তোমার জায়গা ছেড়ে দিয়ে সত্যিই উদারতার পরিচয় দিয়েছ যার জন্য আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। তোমরা জীবনে অনেক দূরে যাও এবং এপিবিএনের বিতার্কিকদের অপ্রতিরোধ্য ধারা অব্যাহত রেখে স্কুলের নাম জাতীয় পর্যায়ে খোদাই করে আসো - এই শুভকামনা রইলো। এরপরেই আসে আবিদ ভাইয়া, বিতর্কের আগে এবং বিতর্ক চলার সময় অনুপ্রেরণা,সাহস যোগানো থেকে শুরু করে বিতর্ক শেষে আনন্দ ভাগাভাগির সময় পর্যন্ত আদর্শ বড় ভাইয়ের মতো পাশে থাকার জন্য তোমাকে যত ধন্যবাদ জানাবো ততই ছোট করা হবে, তোমার মতো সিনিয়র পাওয়াও চাট্টিখানি ভাগ্যের ব্যাপার নয়। এভাবেই সদা পাশে থেকো, সাথে আরও অনেক কিছু করা বাকী। তারপরেই কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই সৌপর্ন মাছুম স্যারকে আমাদের বিতর্কের আগের দিন বিষয়বস্তু নিয়ে সাহায্য করার জন্য। এরপর শ্রদ্ধেয় আশিক স্যার, একদম বন্ধু ও বড় ভাইয়ের মতোই সব জায়গায় সহযোগিতা করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। বিশেষ করে আপনার দেওয়া মোটিভেশন 'মানুষের সবথেকে বড় শক্তি তার আত্মবিশ্বাস আবার সবথেকে বড় শত্রুও তার আত্মবিশ্বাস' আমি সারাজীবন স্মরণে রাখবো। সবশেষে যার অবদান সবচেয়েই বেশি তিনি হলেন শামছুন নাহার ম্যাম। আপনার সঙ্গে পরিচয় খুব কম সময়ের জন্য হলেও আপনার মতো ভালো সম্পর্ক খুব কম শিক্ষকের সাথেই হয়েছে। আপনার স্নেহ, ভালোবাসা, উপদেশ, শাসন সবকিছু আজীবন আমার সাথে থাকবে। আর কিছুদিন পর প্রাক্তন হয়ে যাবো, কালের পরিক্রমায় নতুন তার্কিকদের আগমনে আবার এপিবিএন মুখরিত হবে, কিন্তু ২০২৪ সালের আপনার সহযোগিতায় করা সমকাল,টুর্নামেন্ট,দুদকের স্মৃতি সবসময়ই আমাকে পীড়া দেবে। প্রতিদিনই একবার মনে হবে 'ইশশ আরেকবার যদি আপনার সোনার ছেলে আদিত্য আপনার সাথে বিতর্ক করতে পারত।' আরেকবার যদি বিতর্ক শেষে বলতে পারতো - 'ম্যাম আমরা জিতে গেছি না?' কিন্তু দুঃখের বিষয় তা হয়তো আর সম্ভব হবে না। যাঁর শূন্যতা আজীবন আমায় কাঁদাবে। আপনার হাত ধরে আরও চমৎকার তার্কিক গড়ে উঠুক, এপিবিএন জাতীয় পর্যায়ে সারাদেশে চ্যাম্পিয়ন হোক। বিতার্কিক হয়ে না পারলেও দর্শক হয়ে এসে সেই মুহূর্তের অংশীদার অবশ্যই হবো। আমার জন্য দোয়া করবেন।
এছাড়াও ধন্যবাদ জান্নাতি রাওনাক, সায়্যিদুর রহমান শোভন, শাহনেওয়াজ হোসেন জিসন, রাফিউর রহমান সাহিত্য আমাদের পাশে থাকার জন্য। সর্বোপরি আমার প্রতিটি শিক্ষক, সিনিয়র, সহপাঠী, জুনিয়র যারা এই জার্নি তে আমাদের সাথে ছিলেন সকলকে জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গভীর ভালোবাসা, আমার স্মৃতির বাক্সকে সমৃদ্ধ করার জন্য। আপনাদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহুর্তে মনে গেথে থাকবে আজীবন, ধন্যবাদ আপনাদের।অশেষ কৃতজ্ঞতা জনাব আব্দুর রাজ্জাক স্যার, এ্যাডিশনাল ডিআইজি বাংলাদেশ পুলিশ, জনাব জাফর ইকবাল স্যার, (সহকারী প্রধান শিক্ষক) জনাব মাহবুবা হক (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) ম্যামকে।