বিচার
একটা দোতলা বাড়ির নিচ তলায় ছাত্র মেস। অনেক রকম ছাত্র থাকে।একদিন নীরব বিকেলে আকাশের বহু রঙের খেলা। দুষ্টু ছেলের দল সুতো কাটা ঘুড়িকে ঢিল ছুড়ে নামানোর চেষ্টায় ব্যস্ত।অন্য কারো ছাদে নামতে দিবে না। পাশে এক বিশাল গ্যারেজ। সিএনজির বিশ্রাম নয় মানুষেরও নীরব নেশার আড্ডা। পাশে পানাপুকুর, শহরের প্রাণ না হয়ে পৃথিবীর জঞ্জাল বুকে নিয়ে বিলীন-দুঃখে কাঁদে।আজ সেখানে প্রচুর লোকসমাগম। কোলাহল। এমনকি অশ্রাব্য ঝগড়ায় নারীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় আশেপাশের চারতলা, পাঁচতলা ভবনগুলোতে। উৎসুক উঁচু গৃহবাসীরাও দাঁড়ায় বেলকুনি, জানালার কার্নিশ কিংবা ছাদে।চারপাশে প্রচুর মানুষ। অপরাধীকে বেঁধে রাখা হয়েছে নিচতলা মেসের সিঁড়ির কাছে। বিচার হবে। বিচারের আগে বাহিরে মিমাংসাহীন সন্ধির ফল দাঁড়ায় হাতাহাতি পর্যন্ত। মেসের বড় বড় ছেলের দল তেড়ে যায় এক মাঝবয়সী মহিলাকে মারতে। উপস্থিত অনেকে ফিসফিসিয়ে বলে এরা উগ্রপন্থী।নীরব থাকায় ভালো।মহিলার কণ্ঠে আকুতি।অপরাধীকে নিয়ে টানাহেঁচড়া। পক্ষদল টেনে বার করতে চায় বিচারের কাঠগড়া থেকে আর বিপক্ষদল আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখে শাস্তির জন্য। অপরাধ মেস শিক্ষার্থীদের ভাতের চাল চুরি।
পরিশেষে স্থানীয় প্রভাবশালী শ্রমিক নেতার বিচারের রায়ে জরিমানার বদৌলে মুক্তি পায় অপরাধী।
তখন অজস্র কৌতুহলী দৃষ্টিপথে চেয়ে ভাবে সামান্য চাল চুরির অপরাধে প্রহারের সাথে জরিমানা ,? একটা পাকস্থলী কত মণ চাল ধারণ করতে সক্ষম?উত্তর জানা নেই।
যুগের রঙ্গমঞ্চে মানুষের বিচারে বোবা,নির্বাক কালোরঙা তেজী ছাগলটি ,গোধূলি পেরোনো ক্ষণে পাখিদের সাথে অনুতাপে নয়, লজ্জায় ছুটে যায় নিজ গৃহে...