সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ হতে"সাহিত্য সংঘ" প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রাণপ্রিয় রাজ্জাক স্যারের অবদানগুলোর জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন
 
                                শুভ সন্ধ্যা,
প্রিয় শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং উপস্থিত সকল দর্শকবৃন্দকে।
আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি আমাদের সকলের প্রিয় সভাপতি জনাব আব্দুর রাজ্জাক স্যারের বিদায় উপলক্ষে। তিনি আমাদের সকলের জন্য,আমাদের স্কুলের জন্য যে অসাধারণ কাজগুলো করেছেন, তার জন্য আমরা সকলেই তার নিকট কৃতজ্ঞ। স্যার আপনার অবদান আমাদিগগণের জীবনে সত্যিই অবিস্মরণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক। সর্বদা আপনি আমাদের ক্লাসে এসে আমাদের বন্ধু হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপনি যে পরিমাণ মমতা ও যত্ন নিয়ে আমাদের সমস্যা সম্পর্কে জেনেছেন,তা সত্যিই অসাধারণ ও প্রশংসনীয়। রাজ্জাক স্যার আসার আগে একজন সিও স্যারের সাথেও যে এত সহজভাবে কথা বলা যায় তা ছিল আমাদের কল্পনাতীত। আমার এই ৯ বছরের স্কুলজীবনে দেখা এপিবিএন-এর সভাপতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ এবং অমায়িক একজন মানুষ হলেন আমাদের রাজ্জাক স্যার। তার মতো মানুষ আমি খুব কম দেখেছি আমার এই ক্ষুদ্র স্কুলজীবনে। আমাদের স্কুলে আগে কলেজ ভবনে প্রজেক্টরের সু-ব্যবস্থা ছিল তবে স্কুল ভবনে তেমন ছিল না। আমাদের পড়াশোনায় কষ্ট হতে পারে ভেবে তিনি আমাদের স্কুল ভবনেও প্রজেক্টরের সু-ব্যবস্থা করেছেন, ক্যাপ্টেন নির্বাচনেে ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। তাছাড়াও আমাদের মেয়েদের বিশেষ করে কোনো সমস্যা হচ্ছে কী না, যেমন ধরা যাক বাথরুম সংক্রান্ত। এতো ক্ষুদ্র বিষয়ে ও তিনি নিজ দায়িত্ব নিয়ে তদারকি করেছেন, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য! স্যার আমাদের একাডেমিক ক্ষেত্রে উন্নতির পিছনে অবদানে আরও যা যা করেছেন তা এই মূহুর্তে আমার পক্ষে বলে শেষ করা অসম্ভব। জনাব রাজ্জাক স্যার শুধু আমাদের সভাপতি নন,বরং তিনি একজন অনুপ্রেরণাদাতা এবং পথপ্রদর্শক। আপনার নেতৃত্বে ও মহানুভবতায় আমরা যা শিখেছি এবং যা অর্জন করেছি,তা আমাদের ভবিষ্যতের পাথেয়। আপনার উদ্যোগে আমাদের সকলের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সহমর্মি মনোভাব এবং নিজের সৃজনশীলতাকে সকলের সামনে তুলে ধরার এক অদ্ভুত প্রয়াস! আগে অনুষ্ঠান হলেই ভাবতাম শুধু নাচ আর গান।তবে এখন অনুষ্ঠান মানেই সেটি শুধুমাত্র আগের সেই একগুঁয়ে ক্ষেত্রসমূহে সীমাবদ্ধ নয়। আজ কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, পুঁথিপাঠ তো কাল দলীয় নাটক, স্বরচিত লেখা পাঠ আবার কখনো কখনো নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করার সুযোগ, এসব যেন এখন আমাদের অনুষ্ঠানের আর মনের এক অবিচ্ছেদ্য আবেগের অংশ হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র আবেগের নয় বরং নিজেদের প্রতিভাগুলোকে সকলের সম্মুখে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছি আমরা। যা আগে হতো না,তবে এখন হয় আমাদের প্রাণপ্রিয় রাজ্জাক স্যারের নিঃস্বার্থ অনুপ্রেরণায়। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো আমাদের "সাহিত্য সংঘ"। যা আমাদের সকলের মাঝে সৃষ্টি করেছে এক আবৃত অনুভবের জায়গা। যেখানে আমরা সকলে নিজেদের প্রতিভাকে বিকাশিত ও প্রকাশিত করার সীমাহীন সুযোগ পেয়েছি! কিছুদিন আগেই এপিবিএন-এ আয়োজিত হয়েছিল আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা। যা এপিবিএন-এর গৌরবোজ্জ্বলময় ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে সামিল হয়েছে। কারণ,অবিশ্বাস্যভাবে হলেও সেখানে এপিবিএন-এর ৪৭ টি বিতার্কিক দল অংশগ্রহণ করেছিল এবং প্রতিটি ধাপে তাদের উৎসাহ ও তার ফলাফল সত্যিই অপ্রত্যাশিত! অপ্রত্যাশিত শুধু এটিই নয় পুরো বিষয়টাই কারণ, আমরা কখনো ভাবতেই পারি নি এভাবেও বিতর্ক আয়োজিত হতে পারে! এই সবকিছুর জন্য সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব স্যারের প্রাপ্য। তার অনুপ্রেরণায় এটি সম্ভব হয়েছে। তবে,শুধুমাত্র এইটিই নয় আমাদের লুকায়িত প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য স্যারের নিজস্ব উদ্যোগে এবং অনুপ্রেরণায় বাস্তবায়িত হয়েছে" এপিবিএন অনলাইন জার্নাল"। যেখানে আমরা যেমন উৎসাহের সহিত নিজের লেখাগুলো জমা দিই তেমনি স্যারও উৎসাহ নিয়ে নিজের হাজারো ব্যস্ততার মাঝে দায়িত্ব নিয়ে সেগুলোকে দেখার চেষ্টা করেন, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য এবং প্রশংসনীয়! এছাড়াও মাঝেমাঝে আজ আন্তঃশ্রেণি রচনা প্রতিযোগিতা তো অন্যদিন নিজস্ব সৃজনশীলতাকে তুলির আঁচড়ের সাহায্যে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলে অবিশ্বাস্য এক প্রদর্শনী! তাছাড়াও আরও কত কী যে হয় তার আনন্দ না বলে প্রকাশ করা যাবে আর না শেষ করা যাবে।সবকিছুর পিছনে রয়েছে আমাদের প্রাণপ্রিয় রাজ্জাক স্যারের একরাশ উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, সহযোগিতাসহ আরও অনেক কিছু। আপনি নেপথ্যে থেকে একজন নিঃস্বার্থ অভিভাবকের মতো আমাদের পাশে থেকেছেন। আপনার এই অবদান কখনো ভুলবার নয়। আজ আমরা আপনাকে বিদায় জানাচ্ছি ঠিকই তবে আপনার শিক্ষা, মমতা, ভালোবাসা আামদের মনে চিরকাল জাগরুক হয়ে থাকবে। আপনার নেতৃত্বে আমরা যা শিখেছি তা আমাদের জীবনে চলার পথে আলোকবর্তিতা হিসেবে কাজ করবে। স্যারের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা অশেষ। আমরা আশা করি,আমাদের স্যার ভবিষ্যতে আরও অনেক সফলতা অর্জন করবেন। আপনার প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা আপনার সাফল্যের প্রার্থনা করি।
"আপনার কঠোর শ্রম, আপন পরম মমতা,
আজ যখন যাবেন দূরে,থাকবে শুধু স্মৃতিরা।
আঁধারের মাঝে আপনি,ছিলেন একজন দিশারী,
আপনার ভালোবাসায় জীবন হলো,সত্যিই স্বার্থক তারি!
পরিশেষে, আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে স্যারের উদ্দেশ্যে একটি উষ্ণ অভিবাদন জানাই!
----------------------ধন্যবাদ--------------------------
 

 
                                                             
                                                                                                                                             
                                                                                                                                            