বিদ্যালয় স্মৃতি ও প্রাপ্তি

আমি জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা নবম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী! আমার আজকের লেখায় আমি আমার একটি ছোট্ট অর্জনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি। আমি অভিনয়ের প্রতি অসম্ভব আগ্রহী।নাট্যজগতের মাঝে নিজের আলাদা পরিচয় খুঁজে পাই, আর এই অভিলাষকে পূরণে বিপুল অবদান রাখছে আমাদের স্বনাম ধন্য বিদ্যালয়য়ের সহশিক্ষা কার্যক্রম অঙ্গন 'এপিবিএন সাহিত্য ও সংস্কৃতি সঙ্ঘ'। আমাদের প্রাক্তন সভাপতি প্রিয় আব্দুর রাজ্জাক স্যার এর এটি উদ্বোধন করেন। আমদের প্রতিষ্ঠানে এরূপ অনাবদ্য অবদান রাখার জন্য তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি সঙ্ঘের আয়জনে নিয়মিত নাটক করি। আমার প্রথম অভিনয়ের যাত্রা ভাল লাগা প্রথম শুরু হয় আমাদের স্কুলের সাহিত্য ও সংঘে নাটক মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে। 'খ্যাতির বিড়ম্বনা, মাস্টার মশাই, কর্তা গিন্নীর বাক যুদ্ধ এমন বেশ কয়েকটি নাটকে আমি প্রধান চরিত্রে অংশগ্রহণ করেছি। এছাড়াও নাটকের মাধ্যমে অন্যান্য শিক্ষার্থীর জড়োতা, মঞ্চে কথা বলার সাহস এসবও তৈরি হয়েছে যা আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতেও সহায়তা করছে।এবং আমাদের স্কুলই একমাত্র যেখানে প্রতি মাসে 'এপিবিএন সাহিত্য ও সংস্কৃতি সঙ্ঘ' থেকে সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয় করা হয়। সব রকম অভিনয় চরিত্র ই আমার পছন্দ। তাই পছন্দ অপছন্দ নিয়ে অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমার তেমন সমস্যা নেই, সব চরিত্রতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি তবে একটু খল চরিত্র পেলে বেশ জমে । আমি স্কুলে এখন বেশ জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে।সবাই অভিনেত্রী,নায়িকা বলে, শুনতে ভালোই লাগে।স্কুলে নাটকের দায়িত্বটাও সবসময় আমার ওপরেই থাকে যেহেতু আমার আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব আমার সাথে নাটক করে তারাও বেশ পারদর্শী।এ বছরের প্রথম জানুয়ারি মাসে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার জন্য আমদের কোন আয়োজন ছিল না। তবে ফেব্রুয়ারিতেই বগুড়া শিশু নাট্যদলের রজতজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষ্যে তারা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং ১০ টি স্কুল থেকে নাটকের জন্য শিক্ষার্থীদের জানান দেন।আমাদের স্কুলেও জানানোর পর আমাদের স্কুলের আইসিটি বিষয়ের ফারহানা ম্যাম যিনি আমাদের 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি সঙ্ঘের সম্পাদক' -বিষয়টি আমাকে জানান এবং আমাদের নাম তালিকাভুক্ত করে সেখানে প্রেরণ করেন। আমি বিপুল উৎসাহে নাটকে অংশগ্রহণ করি।এরপর নাটকের শিক্ষক আব্দুল খালেক স্যার আমাদের ৬ দিন রিহার্সাল করান। তাদের অনুষ্ঠানে বগুড়ার ১২ টি সংগঠন নাচ এবং গানের ইভেন্ট করেন। আমাদের নাটকেরও মোট সদস্য ছিল ১০ জন তবে আমি চেষ্টা করেছি নিজের প্রতিভাকে সবার সামনে প্রকাশ করার তাই আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম, আমাদের বিদ্যালয়য়ের নিয়মিত চর্চা এখানে বেশ সুফল এনে দিয়েছিল। এবং তার ফল স্বরূপ আমি ১২ টি সংগঠনের মাঝে অভিনয়ে দক্ষতার জন্য শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী হয়েছি। যার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমার স্কুল এবং শিক্ষক মহোদয়ের। আমার নিজের অভিনয়ের প্রতিভাকে সবার মাঝে ফুটিয়ে তোলার জন্য এবং এতো দ্রুত সময়ের মধ্যেই নিজের একটি আলাদা পরিচয় উপহার দেওয়ার জন্য সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো আমার স্কুল, শিক্ষকবৃন্দ, আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং সহপাঠীদের কাছে।